সৌদি আরবে অবৈধ বিদেশীদের জন্য ৬ মাসের ক্ষমা ঘোষণা
বিনা ভাড়ায় দেশে ফেরার সুযোগ লাভের জন্য জেদ্দার কান্দ্রা সেতুর কাছে গ্রেফতারের জন্য অপেক্ষা করছে ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়া অবৈধ বিদেশী নাগরিকরা
জেদ্দা থেকে আরব নিউজ : ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া শত শত অবৈধ বিদেশী নাগরিকদের জন্য সৌদি আরব গত মঙ্গলবার ৬ মাসের ক্ষমা ঘোষণা করেছে। ঘোষণায় বলা হয়েছে, এই সময়ের মধ্যে কোন ধরনের শাস্তি ছাড়াই তারা সৌদি আরব ছেড়ে যেতে পারবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, যারা হজ্ব, ওমরাহ, ভ্রমণ অথবা অন্য যে কোন ধরনের ভিসা নিয়ে এসেছিল অথবা পাসপোর্ট আইন ভঙ্গ করেছে তারা এই ক্ষমার আওতায় পড়বে।
এদেরকে দেশে ফিরে যাওয়ার জন্য ২০১০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ২০১১ সালের ২৩ মার্চের মধ্যে নিকটবর্তী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অফিসে প্রয়োজনীয় কার্যাদি সম্পন্ন করার পরামর্শ দিয়েছে মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া এবং অন্যান্য অবৈধ বিদেশী নাগরিকদেরকে ঘোষিত ক্ষমার সুযোগ গ্রহণ করে মেয়াদের মধ্যেই সৌদি আরব ছেড়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
অন্যথায় নির্দেশ অমান্যকারীদেরকে ক্ষমার মেয়াদ শেষে গ্রেফতার করে জেল, জরিমানাসহ কঠোর শাস্তি দেয়া হবে বলেও জানায় মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয় হুশিয়ারি উচ্চারণ করে জানায়, এ অবৈধ বিদেশী নাগরিকদেরকে বহনকারী, আশ্রয়দানকারী অথবা তাদের কাজে নিয়োগকারীদেরকেও কঠোর শাস্তি ভোগ করতে হবে। শাস্তির মধ্যে রয়েছে জেল, জরিমানা ও যানবাহন বাজেয়াপ্ত করার মতো নির্দেশ।
সৌদি আরবের জাতীয় দিবসের দু'দিন আগে এ ক্ষমার ঘোষণা দেয়া হয়। ২৩ সেপ্টেম্বর সৌদি আরবের জাতীয় দিবস। এদিন পবিত্র দুই মসজিদের খতিব বাদশাহ আব্দুল্লাহ সাধারণত বিপুল সংখ্যক দেশী-বিদেশী কারাবন্দীকে ক্ষমা ঘোষণা করেন, যারা ছোটখাট অপরাধে গ্রেফতার হয়েছিলেন।
সৌদি আরবের এ ক্ষমা ঘোষণায় ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া অনেক বিদেশী তাদের খুশির কথা জানিয়েছেন। যারা বিভিন্ন জটিল সমস্যার মধ্যে দিনাতিপাত করছিলেন। ভারতীয় নাগরিক নাসিরউদ্দিন বলেন, ‘‘আমি এ রাজকীয় ক্ষমা ঘোষণার অপেক্ষায় দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষা করছিলাম।’’ জেল, জরিমানার ভয়ে তিনি ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া পরিবারের সদস্যদের পাঠাতে পারছিলেন না। ভ্রমণ ভিসায় তারা সৌদি আরব এসেছিলেন। ১৫ বছর ধরে সৌদি আরবে নরসুন্দরের কাজ করা তিউনিসিয়ান নাগরিক আব্দুল্লাহ বলেন, ক্ষমা ঘোষণার এই রাজকীয় সিদ্ধান্তে আমি দারুণভাবে আনন্দিত। গত ৫ বছর আগে আমার স্ত্রী ও সন্তান ভ্রমণ ভিসা নিয়ে সৌদি আরব আসে। কিন্তু ভিসা শেষ হয়ে যাওয়ায় শাস্তির ভয়ে আমি তাদের দেশে পাঠাতে পারছিলাম না।
তিনি আরো বলেন, আমার জানামতে আমার মত এমন শত শত বিদেশী লোক রয়েছে যারা কঠিন শাস্তির ভয়ে তাদের দেশে পাঠাতে পারছে না। এ ক্ষমার সুযোগে তারা ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া পরিবারের সদস্যদের দেশে পাঠাতে উৎসাহিত হবে।
বিদেশী কূটনীতিক ও ভ্রমণ কর্মকর্তাদের মতে ওমরাহ আইন কঠোর করা এবং আঙ্গুলের ছাপ গ্রহণ করার কারণে সম্প্রতি সৌদি আরবে ভিসার মেয়াদ অতিক্রমকারীদের সংখ্যা অনেকটা হ্রাস পেয়েছে।
জেদ্দার নির্বাসিত কেন্দ্র থেকে নিয়মিত যাত্রীবহনকারী বিদেশগামী বিমানের একজন কর্মকর্তা বলেন, তাদের কোম্পানীর ব্যবসা প্রায় ৩৫ শতাংশ কমে গেছে।
চলতি বছরের প্রথম থেকেই নির্বাসিত কেন্দ্রের চাহিদা কমে যাচ্ছে। সৌদি কর্তৃপক্ষ বিগত বেশ ক বছর ধরে ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া অবৈধ নাগরিকদের সমস্যা সমাধানে চেষ্টা চালিয়ে আসলেও সফলতা ছিল খুবই সামান্য। সরকারি কর্তৃপক্ষ এ সমস্যা সমাধানের জন্য পথ খুঁজছিলেন। ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া অবৈধ বিদেশীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য সরকার প্রতি বছর প্রায় ৪২ কোটি সৌদি রিয়াল খরচ করে।
Thursday, September 23, 2010
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
0 মন্তব্য(সমূহ):
Post a Comment
তুমি তীরে এসে এতটুকু আশ্বাস দাও
যাতে আমি হতবিহ্ববল হয়ে যাই,
আমার স্মৃতিরা কেদেঁ ফেলে
আমার নোঙ্গর ছিড়েঁ যায়.....