Saturday, October 9, 2010

বরিশাল অঞ্চলের লোকসাহিত্যের দুটি ছড়া

আদগান কৈতর তালগাছ বায়
সোনার কৈতর উইড়্যা যায়।
নলবুইনিদ্যা অতীত আইছে
গঞ্জি কিইন্যা লইয়া আইছে।
হে গঞ্জিতো ভাল না
মাইয়া বিয়া দিমু না।
মাইয়ার মাথায় লম্বা চুল
কোথায় পাবো কুসুম ফুল।
কুসুম ফুলের গোন্দে
খোপা বান্দে নোন্দে।
খোপার উপর দাড়াইশ সাপ
লাফ দিয়া পড়ে বেয়াই সাব।
বেয়াই সাবের ডরে
ভুতুম পড়ে চরে।
ও ভুতুম, তুই কর কী?
ধ্যাতরা কাথায় তালি দি।
==============
বিশুদ্ধ বাংলায়-
অর্ধেক কবুতর তালগাছ বায় (আরোহন করা)
সোনার কবুতর উড়ে যায়।
নলবুনিয় (জায়গার নাম) থেকে অতিথি এসেছে
গেঞ্জি কিনে নিয়ে এসেছে।
সে গেঞ্জিতো ভাল না
মেয়ে বিয়ে দেব না।
মেয়ের মাথায় লম্বা চুল
কোথায় পাবো সুগন্ধী (সম্ভবত) ফুল।
(সুগন্ধী) ফুলের গন্ধে
খোঁপা বাঁধে ননদে।
খোঁপার ওপরে দাড়াইশ সাপ (বেনীকে বুঝানো হয়েছে)
লাফ দিয়ে পড়ে বেয়াই সাব (সম্ভবত বেনীকে সাপ ভেবে)
বেয়াই সাবের ডরে
ভুতুম (সম্ভবত কোন ভয়ানক প্রাণী) পড়ে চরে*১
ও ভুতুম, তুই কর কী?
ছেড়া কাথায় তালি দিই।
================
ওয়ান টু থিরি
পাইলাম একটা বিড়ি
বিড়িতে নাই আগুন
পাইলাম একটা বাগুন
বাগুনে নাই আডি
পাইলাম একটা বাডি
বাডিতে নাই কান্দা
পাইলাম একটা রান্দা
রান্দায় নাই ধার
পাইলাম একটা হার
হারে নাই লকট
পাইলাম একটা পকট
পকটে নাই টাহা
ক্যামনে যামু ঢাহা
ঢাহা নাই গাড়ি
ক্যামনে আমু বাড়ি

থিরি-থ্রী; বাগুন-বেগুন; আডি-বীজ; বাডি-বাটি; কান্দা-ধার; রান্দা-রাম দা; ধার-শার্পনেস; লকট-লকেট; পকট-পকেট; টাহা-টাকা; ঢাহা-ঢাকা, ইত্যাদি।
*১=বরিশাল অঞ্চলে গ্রীষ্মকালে মহিষগুলো গরম কাটানোর জন্য জলে নেমে বসে থাকে যারে চরে/চরায় পড়া বলা হয়।
==================
ছি-বুড়ি খেলায় আমরা কিছু অর্থহীন লাইন ব্যবহার করতাম। তার দু'একটা দিচ্ছি-
১. ছি কুত কুত তাইয়া, বাবুলের মাইয়া, বাবুল কান্দে পঁচা কাডাল খাইয়া, খাইয়া, খাইয়া...........(শ্বাস শেষ না হওয়া পর্যন্ত)
২. ওপারেতে যাবো না, ভাডা মাছ খাবো না, ভাডা মাছের ত্যালে, সংসার জ্বলে জ্বলে জ্বলে.........
৩. একছিমালা দুইছিমালা বউ থুইআইছি কদমতলা, কদম ফুল ফোটছে, বউ লইয়া ছোডছে, ছোডছে, ছোডছে.......
৪. কচু পাতায় চিনা জোক, চিনচিনাইয়া রোদ্দুর ওঠ।

0 মন্তব্য(সমূহ):

Post a Comment

তুমি তীরে এসে এতটুকু আশ্বাস দাও
যাতে আমি হতবিহ্ববল হয়ে যাই,
আমার স্মৃতিরা কেদেঁ ফেলে
আমার নোঙ্গর ছিড়েঁ যায়.....